দুই মাস অন্তর বাজারে থাকা মৌসুমি ফল পরীক্ষার জন্য বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনকে (বিএসটিআই) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি ফলমূলে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার রোধে সরকারি সংস্থাটিকে পরীক্ষা অব্যাহত রাখতেও বলা হয়েছে।
বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এ আদেশ দেন।
এ ছাড়া স্থলবন্দরগুলো দিয়ে যাতে রাসায়নিক মিশ্রিত ফল দেশে প্রবেশ করতে না পারে, সে জন্য দুই মাসের মধ্যে সরকারকে সেখানে কেমিক্যাল টেস্টিং ইউনিট স্থাপনেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার, বিএসটিআইর পক্ষে আইনজীবী সরকার এমআর হাসান এবং নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ফরিদুল আলম।
শুনানিতে ফরমালিন পরীক্ষায় আধুনিক যন্ত্র ক্রয়ের বিষয়টি উঠে আসে। তখন আদালত বলেন, দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এ জন্য খাদ্যপণ্য ভেজালমুক্ত রাখতে হবে। সরকার যে কোনো কিছুতে অর্থ বরাদ্দে কার্পণ্য করছে না। কিন্তু সেটার যথাযথ বাস্তবায়ন হচ্ছে না।
আদালত আরও বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনেক কাজ। ফলমূলে কেমিক্যালের ব্যবহার রোধে তাদের নিয়োগ করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া ভ্রাম্যমাণ আদালত অসাধু ব্যবসায়ীদের জরিমানা করছেন। কিন্তু কেমিক্যালের ব্যবহার রোধ করা যাচ্ছে না। এজন্য বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করতে হবে। যারা কেমিক্যাল আমদানি করে তাদের ধরতে হবে। আর জনগণকেও সচেতন হতে হবে।
বিএসটিআইর আইনজীবী সরকার এমআর হাসান বলেন, বাজারে যেসব ফল রয়েছে সেসব ফলে ফরমালিন ব্যবহার করা হলেও তা কাজে দেয় না। এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি প্রতিবেদন রয়েছে। আর আমরা সারাবছরই সার্ভিল্যান্স টিমের মাধ্যমে ফলমূল পরীক্ষা করে থাকি। পরে রিটকারী পক্ষের আইনজীবী মনজিল মোরসেদ ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ফরিদুল আলমের বক্তব্য শুনে আদেশ দেন হাইকোর্ট।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ২০১২ সালে আইনজীবী মনজিল মোরশেদ হাইকোর্টে একটি রিট করেন। পরে ওই রিটের শুনানি নিয়ে ২০১২ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট আম রাসায়নিকমুক্ত করাসহ সাত দফা নির্দেশনা সংবলিত রায় দেন। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্ট রোববার এ নিয়ে ফের আদেশ দিলেন।