শুকলাল দাশ: অবশেষে সংস্কার কাজ শুরু হচ্ছে বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার আরাকান সড়কের। জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে চার মাসের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের কাজ শেষ করার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ১২টি লটে কাজ ভাগ করা হয়েছে। নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দীন। এডিপির ৭১ কোটি টাকা ব্যয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন। আগামী ২৪ জুলাই আনুষ্ঠানিক ভাবে সংস্কার কাজের উদ্বোধন করা হবে।
নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক সংস্কারের মধ্যদিয়ে তিন বছরের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছে নগরীর ঐ অংশের বিশাল জনগোষ্ঠী। পাশাপাশি এর সুফল ভোগ করবে উত্তর ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের হাজার হাজার যাত্রী।
মদুনাঘাট পানি প্রকল্পের পাইপলাইন স্থাপনের জন্য ২০১৬ সালের শুরুতে বহদ্দারহাট-কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত সড়কের একপাশ বন্ধ করে দেয় চট্টগ্রাম পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)। এরপর শুরু করে খোঁড়াখুঁড়ি। ইতোমধ্যে সেই পাইপলাইন স্থাপনের কাজ শেষ। এছাড়াও বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের র্যাম্প নির্মাণের জন্য প্রায় দুই বছর বন্ধ রাখা হয় এই সড়কের বহদ্দারহাটের বড় একটি অংশ। নির্মাণকাজ শেষে ২০১৭ সালে ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে র্যাম্পটি যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। তখন স্থানীয়রা আশা করেছিলেন, তাদের দুর্ভোগ হয়তো কমবে। কিন্তু দুই প্রকল্পের কাজ শেষ হলেও সড়কটির একপাশ খুলে দেওয়া হয়নি, করা হয়নি সংস্কারও। ফলে বহদ্দারহাট মোড় থেকে কাপ্তাই রাস্তার মাথা পর্যন্ত রাতদিন সমানে যানজট লেগে থাকে। এতে দুর্ভোগে পড়তে হয় উত্তর চট্টগ্রামের কাপ্তাই, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া ও হাটহাজারীর একাংশের মানুষের। তার চেয়েও বেশি দুর্ভোগে পড়ে পুরো বোয়ালখালীর জনগণ এবং পটিয়ার একাংশের কালুরঘাট সেতু পার হয়ে নগরীতে আসা লোকজনের। অবশেষে সেই দুর্ভোগ লাগব হতে যাচ্ছে। সংস্কার হতে ৯ম পৃষ্ঠার ১ম কলাম
যাচ্ছে নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের। এডিপির অর্থায়নে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী ও ঠিকাদার।
এ ব্যাপারে মেয়র আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন আজাদীকে বলেন, বহদ্দারহাট থেকে কালুরঘাট পর্যন্ত আরাকান সড়কের কাজ দ্রুত শেষ করা হবে। এজন্য ১২ লটে কাজ ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এডিপি প্রকল্পে অর্থায়ন করছে। পাঁচ কিলোমিটার এই সড়কের সংস্কারে ব্যয় হবে ৭১ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের এক পাশ বন্ধ থাকায় মানুষ কষ্ট পেয়েছে। আগামী ২৪ তারিখ আনুষ্ঠানিক ভাবে সংস্কার কাজের উদ্বোধন হবে।
গতকাল দুপুরে টাইগারপাস চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন কনফারেন্স হলে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের উন্নয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদারদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন মেয়র আ.জ.ম.নাছির উদ্দীন। এসময় তিনি নভেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারদের নির্দেশ এবং কাজের গুণগত মানের ক্ষেত্রে কোনো আপোষ করা হবে না বলে জানিয়ে দেন। একই সাথে চসিকের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীকে সার্বক্ষণিক তদারকি করারও নির্দেশ দেন। এসময় মেয়র বায়েজিদ বোস্তামী রোডে দুই লটে ২৪ কোটি টাকা এবং এয়ারপোর্ট রোডে চার লটে ৪১ কোটি টাকার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারদের কাছে থেকে জানতে চান। ঠিকাদারের উদ্দেশে মেয়র সক্ষমতার বাইরে গিয়ে কাজ না নেওয়ার আনুরোধ জানান। পাশাপাশি অধিক লাভের আশায় একসাথে একাধিক কাজ না নিয়ে নির্মাণ সামগ্রির গুণগত মান অক্ষুণ্ন রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন মেয়র।