শারীরিক অন্যান্য সমস্যার মতো মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত হলে সঠিক কাউন্সেলিং এবং চিকিৎসায় আরোগ্য লাভ করা যায়।

ছোঁয়া খন্দকার

তবে এর বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে বই পড়া। সবচেয়ে ভালো প্রয়াস হতে পারে কোন সাহিত্যের বই খুঁজে বের করে পড়া। সঠিক ধরণের সাহিত্যের বই মানসিক চাপ কমিয়ে পুনর্জীবিত করে তুলতে সক্ষম। একটি নতুন দৃষ্টিকোণ থেকে ভাবতে, মনকে সতেজ করে তুলতে সাহায্য করতে পারে কোন সাহিত্যের বই।

সাহিত্যিকদের ভাষ্যমতে, একটি বই মূলত নীতিতে অটল থাকার বার্তা দেয়, এর ফলে নানা ধরণের মানসিক পীড়া থেকে মুক্তি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মনও পরিশুদ্ধ হয়। বই পড়ার মধ্য দিয়ে জীবনের সকল উত্থান-পতনের মধ্যেও ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব। লেখকদের দাবি, গল্প, উপন্যাস, সাহিত্য সব হতাশা বা বিষাদ থেকে পালাতে সাহায্য করে।

ইংরেজিতে যাকে বলে এস্কেপিজম বা পলায়নবাদ। বই বা কোনো উপন্যাস পড়ার মধ্য দিয়ে এর সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত  থাকার কারণে কোনো দৃশ্যপট নিজেই তৈরি করা যায়। বিষয়টি অন্য যেকোনো শিল্পের চেয়ে তীব্রতর এবং শক্তিশালী।

বই তার কাঠামোগত বিশ্লেষণের সাহায্যে অগোছালো মনে শৃঙ্খ্লা আনতে পারে। বইয়ের কোন অতিপ্রাকৃত গল্পের সঙ্গে নিজেকে ‍যুক্ত করতে পারলে, মনে থাকা নানা বিষয়ের সমাধানের চেষ্টা করা যায়। একটি শক্তিশালী সাহিত্য বাস্তব জীবনে রাখতে পারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক ভূমিকা।

প্রিয় উপন্যাসগুলো বার বার পড়লে বিশেষ ধরণের বিবলিওথেরাপি বা পুস্তকীয় চিকিৎসা সরবরাহ করতে পারে। চিকিৎসাটির পরিপ্রেক্ষিতে বলতে গেলে ’টেস অব দ্য ডার্বারভিল’ বইটির কথা চলে আসে।

বইটির লেখকের মতে, মনের স্তরগুলো বিচরণের সুযোগ হবে বইটির মাধ্যমে। জীবনে চলার পথে মাঝে মাঝে ফের পেছনের সময়গুলোর দিকে নিয়ে যেতে পারে বইটি। তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্য সঙ্কট মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সাহিত্য।

বর্তমান প্রজন্মদের ‍বুলিং, মাদক, সামজিক বর্জন থেকে সৃষ্ট নানা ইস্যু মোকাবেলা করতে এখন বেশি সংখ্যক উপন্যাস লেখা হচ্ছে।

ফলে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি সৃষ্ট সমস্যা সমাধানের জন্য মনোবল জোগাতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বই পড়া। বই পড়া মানসিক উপকার তো করেই সাথে লেখালেখির ক্ষেত্রেও এর প্রভাব বেশ লক্ষণীয়। লেখালেখি মানসিক ট্রমা বা আবেগ বের করতে দুর্দান্তভাবে কাজে আসে। মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে বই পাঠকের ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলতে সহায়ক।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here