জামিনে মুক্ত হওয়ার পর বাংলা ট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি আরিফুল ইসলাম রিগান তাকে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন। তার বর্ণনাতে জানা গেছে শুক্রবার (১৩) মধ্যরাতে আরিফের বাড়িতে হানা এবং তার তাকে নির্যাতনের নেতৃত্ব দিয়েছেন আরডিসি (সিনিয়র সহকারী কমিশনার-রাজস্ব) নাজিম উদ্দিন। যদিও তার দাবি, ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এছাড়া তার বর্ণনাতেই স্পষ্ট এ ঘটনা সম্পর্কে সবই জানতে ডিসি সুলতানা পারভীন। ঘটনার পর বিভিন্ন সময় তিনি বলেছেন, ঘটনার দিন তিনি কুড়িগ্রামের রৌমারি ছিলেন।

ভয়াবহ সেই ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আরিফ বলেন, ‘দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেই আরডিসি নাজিম উদ্দিন আমার মাথায় কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন। মারতে মারতে আমাকে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তুলে চোখ-হাত-পা বেঁধে ফেলা হয়। এরপর আমাকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে এনকাউন্টার দিতে চায়। আমাকে বারবার বলে, তুই কলেমা পড়ে ফেল, তোকে এনকাউন্টার দেওয়া হবে। এসময় আমি অনেক অনুনয় বিনয় করি। আমি আমার প্রাণ ভিক্ষা চাই। বলি, আমার বাবা-মা নেই, আমার দু’টি সন্তান আছে। আমাকে যেন না মেরে ফেলা হয়। তাহলে আমার বাচ্চা দুটি এতিম হয়ে যাবে। পরে তারা আমাকে গাড়িতে করে একটি ভবনে নিয়ে যায়। আমি চোখের কাপড় একটু খুলে বুঝতে পারি এটা ডিসির কার্যালয়। আবার নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে আমাকে একটি কক্ষে নিয়ে বিবস্ত্র করে বেধড়ক মারধর করে এবং বলে তোর ভিডিও করে রাখছি। এসময় অকথ্য ভাষায় গালাগালি করা হয়। এসময় নাজিম উদ্দিন বারবার আরেকজনকে বলছিলেন, ডিসি স্যারকে ফোন দাও, মেসেজ দাও। কী করবো সেটা বলতে বলো?’

প্রসঙ্গত,  শুক্রবার মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে মারধর করে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় আরিফুল ইসলামকে। তার বাসায়  আধা বোতল মদ ও দেড়শ’ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে অভিযোগ আনা হয়। এরপর গভীর রাতে জেলা প্রশাসকের অফিসে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here