যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন প্রিয়া সাহা। রোববার (২১ জুলাই) ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও বার্তায় তিনি এ ব্যাখ্যা দেন।

প্রিয়া সাহা তার বেসরকারি সংস্থা ‘শারি’র ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত ওই বার্তায় বলেন, ‘১৯৪৭ সালের দেশভাগের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ছিল ২৯ দশমিক ৭ ভাগ। আর ২০০১ সালের জরিপ অনুযায়ী এখন সংখ্যালঘু জনসংখ্যার হার ৯ দশমিক ৭ ভাগ। এখন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক ১ কোটি ৮০ লাখ। তার মানে বিপুলসংখ্যক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোক বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে গেছেন। ১৯৪৭ সালের পর এখন যে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রয়েছেন, তার সঙ্গে হিসাব মেলালেই আপনারা বুঝতে পারবেন আমি কী বলতে চেয়েছি।’

গবেষক ও শিক্ষাবিদ ড. আবুল বারকাতের গবেষণার উদাহারণ দিয়ে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমি এক সময় তার (আবুল বারকাত) সঙ্গে কাজ করেছি। আবুল বারকাত বাংলাদেশ সরকারের পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করেই গবেষণায় দেখিয়েছেন, প্রতিদিন গড়ে ৬৩২ জন সংখ্যালঘু বাংলাদেশ থেকে হারিয়ে যাচ্ছেন। আমি সেই গবেষণা থেকেই রেফারেন্স দিয়েছি।’

প্রিয়া সাহা বলেন, ‘২০০১ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে হিন্দু জনগোষ্ঠীর ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, সেটা সকলেই জানেন। আর আমার নিজ গ্রামে ২০০৪ সালে ৪০টি হিন্দু পরিবার থাকলেও এখন সেই সংখ্যা মাত্র ১৩টি।’

তিনি আরও বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের আমন্ত্রণে আমি এখানে এসেছি। যুক্তরাষ্ট্র সরকার থেকে আয়োজিত মন্ত্রী পর্যায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনেও যোগ দেওয়ার উদ্দেশে আমি এখানে আসি। আমি হঠাৎ করেই এখানে আসি। সে কারণে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতারা সেটা জানেন না। ঐক্য পরিষদের নেতা রানা দাশ গুপ্ত বা বাদলদা এখানে আসার কথা জানতেন না।’

এছাড়া এর আগেও একাধিকবার যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছেন বলে ভিডিও বার্তায় জানান প্রিয়া সাহা।

এই নারী গত ১৭ জুলাই হোয়াইট হাউজে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে অভিযোগ করেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘গুম’ হয়ে গেছে। তার ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। জমি কেড়ে নেওয়া। মুসলিম উগ্রবাদীরা এটা করেছে, এতে রাজনৈতিক শক্তির মদদ রয়েছে।’ প্রিয়া সাহার এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here