অনলাইন ডেক্স: ভিয়েনতিয়েনে লাওসকে হারিয়ে বিশ্বকাপের মূল বাছাইপর্বে এক পা দিয়ে রেখেছে বাংলাদেশ। এখন সেটা পাকাপোক্ত করার পালা। ভুটান বিপর্যয়ের পর নির্বাসন থেকে উঠে এসে দেশের ফুটবলের প্রত্যাবর্তনটা ভালোভাবে শুরু হলেও শঙ্কা ঝেঁকে আছে বাংলার আকাশে। লাওস বধের সুখে মেঘ জমে আছে একটি শঙ্কাও। ঘরের মাঠেই না পা হড়কায় লাল-সবুজরা।
ঘরের মাঠেই সুখের সঙ্গে দুঃখের গল্পটাও লম্বা বাংলাদেশের। সেটা নিয়েই যেন চিন্তার ভাঁজ প্রধান কোচ জেমি ডের কপালে।
গেল সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে দুই জয় নিয়েও শেষ ম্যাচে নেপালের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল গ্রুপ পর্ব থেকেই। তারপরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক গোল্ড কাপেও সেই দুঃখ বয়ে এসেছিল। সেমি ফাইনালে প্যালেস্টাইনের কাছে হেরে বিদায়। ঘরের মাঠেই আন্তর্জাতিক ফিফা প্রীতি ম্যাচে শ্রীলঙ্কার কাছে হারের ক্ষত এখনও শুকায়নি।
তার মাঝে অবশ্য বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ নিয়ে ব্যস্ততা স্থানীয় ফুটবলারদের। সেরা পারফরমারদের নিয়ে জাতীয় দলে নতুন-পুরান মিলে আবার নতুন চ্যালেঞ্জে মাঠে নামে বাংলাদেশ। থাইল্যান্ডের ১০ দিনের বিশেষ ক্যাম্প শেষে লাওসে স্বাগতিকদের ১-০ ব্যবধানে হারিয়ে ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের মূল মঞ্চে একটু এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
এই একটু এগিয়ে থাকাটাই যেন আনন্দের থেকে শঙ্কা দিয়ে আছে জেমি ডে’কেও। গোলের ব্যবধানটা ১ বলেই এখনও নির্ভার নয় কোচ, ফুটবলার, কর্মকর্তা কেউই। সবাই তাকিয়ে আছে ১১ জুন লাওসের বিপক্ষে হোম ম্যাচের দিকেই।
তাই উদযাপনটাও ১১ তারিখের জন্য তুলে রেখেছে কোচ। এই ম্যাচ নিয়ে একটু বেশি সতর্ক দেখালো জেমিকে, ‘এক গোলের ব্যবধান সুবিধার নয়। গত সাফেও দুই ম্যাচ জিতে এক ম্যাচের হারে বিদায় নিতে হয়েছিল। তাই এবার খুব সতর্কতা অবলম্বন করতে চাই। রক্ষণে আরও জমাটবদ্ধ হতে চাই।’
লাওসের বিপক্ষে সম্প্রতি পারফরমেন্সে ফ্যাবারিটের তকমাটা বাংলাদেশের পক্ষেই। গত বছরে তাদের মাটিতেই ২-২ ব্যবধানে ড্র, ঘরের মাটিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে ১-০ ব্যবধানে জয় ও সবশেষ অ্যাওয়ে ম্যাচে ১-০ ব্যবধানে জয় নিশ্চয় বাড়তি আত্মবিশ্বাস যোগাবে বাংলাদেশকে। তবে, সেই ‘কিন্তুর’ ভয়টা মনে আছেই বাংলাদেশের। লাওস ম্যাচে তিনটা হলুদ কার্ড পেয়ে পরের ম্যাচে একটু ব্যাকফুটে থাকবে লাল-সবুজরা।
তাদের মধ্যে ইয়াসিন ও বিশ্বনাথ দু’জনই রক্ষণভাগের। আরেকটি একমাত্র গোলদাতা রবিউল হাসানের। জার্সি খুলে হলুদ কার্ড দেখতে হয়েছে দেশের উদীয়মান এই ফুটবলারকে। সেখানে পুরো ম্যাচে লাওস হলুদ কার্ড দেখেছে মাত্র একটি। সেটা নিয়েও দুশ্চিন্তা জেমির, ‘তিন কার্ড পাওয়া আসলেই দুঃখজনক। তবে, এই ম্যাচে আমাদের আরও সতর্ক থাকতে হবে কার্ডের ব্যাপারে। নাহলে ১০ জন হয়ে যেতে পারি যেকোন সময়। খেলোয়াড়দের আরও ডিসিপ্লিন হওয়া দরকার।’
এ ম্যাচ জিতলে বা ড্র করলে বিশ্বকাপের অন্তত আটটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে বাংলাদেশ। হারলে আরও তিন-চার বছর আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টের বাইরে থাকতে হবে লাল-সবুজদের। আবারও নির্বাসনে যাওয়ার ভয়তো আছেই!