রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সংখ্যালঘু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতা ও ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস করেছে জাতিসংঘ। এর প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানিয়েছে, এ প্রস্তাব দেশটির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মাঝে নতুন করে অনাস্থা ও অবিশ্বাসের বীজ বপন করবে।

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে নিন্দা প্রস্তাবটি পাস হওয়ার পর এক প্রতিক্রিয়ায় মিয়ানমার এ সতর্কতা জানায়।

নিন্দা প্রস্তাবের তীব্র বিরোধীতা জানিয়ে মিয়ানমারের জাতিসংঘ প্রতিনিধি হাউ দো সুয়ান বলেন, এ নিন্দা প্রস্তাব মানবাধিকার নীতির দ্বিমুখী প্রয়োগের এক উৎকৃষ্ট উদাহরণ। মিয়ানমারকে অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে রাজনৈতিকভাবে চাপে ফেলতেই এটি পাস করা হয়েছে।

‘রাখাইনের জটিল পরিস্থিতি সমাধানে এ প্রস্তাবে কোনো সমাধান খোঁজার চেষ্টা করা হয়নি। এমনকি এতে রাখাইন সমস্যার ব্যাপারে মিয়ানমার সরকারের বিভিন্ন প্রচেষ্টাকেও স্বীকার করা হয়নি।’

হাউ দো সুয়ান বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে পাস হওয়া এ নিন্দা প্রস্তাব নতুন করে অনাস্থা ও অবিশ্বাসের বীজ বপন করবে। এবং তা আগামীতে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও বিচ্ছিন্নতা তৈরির ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে।

শুক্রবার ১৯৩ সদস্যের মধ্যে ১৩৪ ভোটে পাস হয় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের নিন্দা প্রস্তাব। এসময় প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট পড়ে ৯টি। এছাড়া ২৮ সদস্য ভোট প্রদানে বিরত থাকে। এ নিন্দা প্রস্তাব মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কোনো আইনী বাধ্যবাধকতা তৈরি না করলেও, তা দেশটির ব্যাপারে বর্তমান বিশ্বের মতামতকে প্রতিফলিত করে।

প্রস্তাবে জরুরি ভিত্তিতে রোহিঙ্গাসহ সব সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে সহিংসতা ও বিদ্বেষ বন্ধে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

গত চার দশক ধরে ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম সহিংসতার মুখে পালিয়ে মিয়ানমারের পার্শ্ববর্তী বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সহিংস অভিযানের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে যায় প্রায় সাড়ে ৭ লাখ রোহিঙ্গা। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে নিন্দা প্রস্তাবে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here