পূজন সেন :
চট্টগ্রাম-৮ আসনে উপ-নির্বাচনে নানা নাটকীয়তার পর প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন ৬ প্রার্থী। গত ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে প্রচার প্রচারণায় নেমেছেন প্রার্থীরা। নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে কর্ণফুলী নদীর দুইপাড়ের জনপদ।

নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিন আহমদ (নৌকা), দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান (ধানের শীষ), বাংলাদেশ ন্যাশানালিস্ট ফ্রণ্ট (বিএনএফ) চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ (টেলিভিশন), ইসলামিক ফ্রণ্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ আহমদ (চেয়ার), ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত (কুঁড়েঘর) এবং স্বতন্ত্রপ্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক (আপেল)।

দীর্ঘ ৪৬ বছর পর আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীকে নৌকা প্রতীকে মনোনয়ন দিয়েছেন এ উপ নির্বাচনে। দলীয় প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদকে পেয়ে উজ্জ্বীবিত নগর, জেলা-উপজেলার কর্মী সমর্থকরা। তবে বিএনপিও এ নির্বাচনে ছাড় দিতে রাজি নয়। আবু সুফিয়ান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে রয়েছেন। বিএনপি’র শীর্ষ নেতা-কর্মী ও সমর্থকরাও ধানের শীষে ভোট চেয়ে নির্বাচনী প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন।

নিজ নিজ কর্মী সমর্থকদের নিয়ে প্রার্থীরা ভোটারদের মন গলাতে প্রচারযুদ্বে অবতীর্ণ হয়েছেন। এলাকাবাসীর সুখ দুঃখে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি ছাড়াও এলাকার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত কথা বলছেন প্রার্থীরা।

ঘোষিত তপশীল অনুযায়ী এ আসনে আগামী ১৩ জানুয়ারি ১৭০টি ভোট কেন্দ্রে প্রথমবারের মতো ইল্কেট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ বলেন, এলাকাবাসী উন্নয়ন চায়, তারা এলাকার সন্তানকেই জনপ্রতিনিধি করতে চান। আসন্ন ১৩ জানুয়ারি দল-মত-নির্বিশেষে চোখ বন্ধ করে কালুরঘাট সেতু বাস্তবায়নে নৌকায় ভোট দেবেন বলে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, এ উপ নির্বাচনে কারো জয় পরাজয়ে সরকার পরিবর্তন হবে না। তাই উন্নয়নের স্বার্থে নৌকার বিকল্প নেই।

.

বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ধানের শীষ গণমানুষের অন্তরের প্রতীক। জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আজকে একটি গণতান্ত্রিক দেশে জনগণ ভোট দিতে পারবে কি না শঙ্কায় থাকতে হয়। ১৩ জানুয়ারি শুধু ভোটের ব্যাপার নয়, মানুষের নাগরিক অধিকার। ভোটের অধিকার কেউ যদি নস্যাৎ করতে চায়, তাহলে জনগণ তা রুখে দিবে।

২০১৮ সালে এ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচিত বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) কার্যকরী সভাপতি মঈন উদ্দিন খান বাদল গত ৭ নভেম্ব^র ভারতের ব্যাঙ্গালুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তাঁর মৃত্যুতে এ আসন শূণ্য ঘোষণা করে গত ১ ডিসেম্বর এ আসনে উপ-নির্বাচনের তপশীল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন।

পৌর প্যানেল মেয়র এসএম মিজানুর রহমান বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে আওয়ামী লীগের প্রবীণ রাজনীতিবিদ মুক্তিযোদ্ধা মোছলেম উদ্দিনকে ভোটাররা বেছে নেবেন। তিনি এ এলাকারই সন্তান হওয়ায় এলাকার প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতাও বেশি রয়েছে।

এ আসনে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে সাংসদ নির্বাচিত হন এম কফিল উদ্দীন, দ্বিতীয় সংসদে সিরাজুল ইসলাম, তৃতীয় সংসদে জাতীয় পাটির হয়ে এম. মোরশেদ খান, চতুর্থ সংসদে বিএনপি’র সিরাজুল ইসলাম, সপ্তম সংসদ ও অষ্টম সংসদে এম. মোরশেদ খান, এরপর টানা নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে মহাজোটের শরীক দল জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল সাংসদ নির্বাচিত হন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here