নিজস্ব প্রতিবেদক  : চট্টগ্রাম-দোহাজারী রেলপথে বেড়েছে যাত্রী। এ পথে ৫টি বগি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে দুই জোড়া যাত্রীবাহী রেল। যাত্রী বাড়ায় গাদাগাদি করে রেলবগিতে যাতায়াত করছেন দক্ষিণ চট্টগ্রামের মানুষ। অনেকে ছাদে উঠে পড়ছেন বগিতে ঠাই না হওয়ায়। ফলে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রী সাধারণ।

যাত্রীর চেয়ে রেলে বগি কম হওয়ায় উপচে পড়ছে ভীড়। এতে নির্ধারিত গন্তব্য যাত্রায় নারী, বৃদ্ধ ও শিশুদের ভোগান্তি চরমে পৌঁছে। রেলযাত্রীদের দাবি, এ ভোগান্তি লাঘবে যদি আরো কয়েকটি বগি বাড়ানো হলে যাত্রীদের যাত্রা হতো স্বস্তিদায়ক।

এ পথে এক সময় ছয় জোড়া যাত্রীবাহী রেল আসা যাওয়া করতো। নব্বইয়ের দশকে সংস্কার বিহীন এ পথে যাত্রীবাহী রেল এক জোড়ায় নামিয়ে আনা হয়। এতে বিপাকে পড়েন দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রী সাধারণ।

গত একদশকে রেল লাইন, সেতু, রেল গেইট ও স্টেশন নির্মাণের মধ্য দিয়ে নতুন রূপ দেওয়া হয় এ রেলপথকে। চট্টগ্রামবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের ৩ নভেম্বর আরো একজোড়া রেল যুক্ত করা হয়। ফলে দুই জোড়া রেল সকাল-বিকেল এ পথে চলাচল শুরু করলে রেলমুখী হয় দক্ষিণ চট্টগ্রামের যাত্রী সাধারণ।

বোয়ালখালী উপজেলা সদরের বাসিন্দা মো. আজিজুর রহমান বলেন, সড়ক পথে নগর যাতায়াত খুবই কস্টকর। বোয়ালখালী নগরের কাছের উপজেলা হলেও কালুরঘাট সেতুতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা জ্যামে আটকা পড়তে হয় ও বোয়ালখালীতে গত দুই দশক ধরে বাস সার্ভিস বন্ধ । এসব ঝক্কি ঝামেলা এড়িয়ে সময় ও অর্থ বাঁচাতে রেলে যাতায়াত নিরাপদ।

বগি বাড়ানোর দাবি জানিয়ে সরকারী চাকুরিজীবি মো. আমজাদ হোসেন বলেন, প্রতিদিনই যাত্রী ভিড় থাকছে এ রেল পথে। বগি কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের।

গোমদণ্ডী স্টেশন এলাকার আজম খান জানান, সকাল ও সন্ধ্যায় প্রচুর যাত্রী নিয়ে চলাচল করছে ৪টি রেল। কালুরঘাট সেতুর ভোগান্তি এড়াতে রেলমুখী হয়েছে বোয়ালখালীর মানুষজন। সে অনুযায়ী যদি সেবাও বাড়ানো হয় তবে সরকারি রাজস্ব আরো বাড়বে বলে তিনি মনে করেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে দোহাজারী পর্যন্ত রয়েছে ১৭টি স্টেশন। এর মধ্যে কালুরঘাট সেতুর পর গোমদণ্ডী, বেঙ্গুরা, ধলঘাট, খানমোহনা, পটিয়া, চক্রশালা, খরনা, কাঞ্চন নগর, হাশিমপুর, খাঁনহাট ও দোহাজারী স্টেশন। গোমদণ্ডী স্টেশন থেকে দোহাজারী স্টেশন পর্যন্ত প্রতিজন যাত্রীর টিকিট মূল্য ৮টাকা ও গোমদণ্ডী স্টেশন থেকে চট্টগ্রাম নগরে যাওয়ার টিকিট মূল্য ৬ টাকা।

এ রেল পথের ১৭টি স্টেশনের মধ্যে গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশনে গত বছরের অক্টোবর মাসে সাড়ে ১৬হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, যাত্রী ছিলেন ৩হাজার ১শত ৫৭জন। দুই জোড়া রেল চালুর পর নভেম্বর মাসে টিকিট বিক্রি হয়েছে ২৭হাজার ৯শত ১৫টাকার ও যাত্রী ছিলেন ৫হাজার ৯৭জন। ডিসেম্বর মাসে টিকিট বিক্রি হয়েছে ৪৩হাজার ৬শত ৫৮টাকার ও যাত্রী ছিলেন ৭হাজার ৮শত ২১জন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত টিকিট বিক্রি হয়েছে ২লক্ষ ১৩হাজার ১শত ২৩টাকার ও যাত্রী ছিলেন ৩৬হাজার ৫৭ জন।

গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আগের তুলনায় এ স্টেশনে যাত্রী বেড়েছে দ্বিগুণ। রেলযাত্রীরা এখন অনেক সচেতন। নিজে তো রেলের টিকিট কাটেনই পাশাপাশি অন্যযাত্রীও টিকিট নিয়েছেন কি না জানতে চান যাত্রীরা।

তিনি আরো বলেন, আপ-ডাউন রেলে ৫টি বগি নিয়মিত আসা যাওয়া করছে। যাত্রীদের কথা বিবেচনা নিয়ে আরো দুইটি বগি বাড়ানো হলে উপকৃত হতো যাত্রীরা।

এবি/সবুজ/আরডি/ডিবি/পিএস

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here