বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে রেসিডেনশিয়াল কলেজের ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনায় ফৌজদারি মামলায় প্রথম আলো সম্পাদকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।

মৃত্যুটি যদি অবহেলাজনিত হয় বা পোস্টমর্টেম ছাড়া লাশ দাফনের মতো অপরাধের সঠিক বিচার করে আদালত দায়ীদের চিহ্নিত করবে বলে মত দিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাছান।

কিশোর আলোর অনুষ্ঠানে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্র নাঈমুল আবরার রাহাতের মৃত্যুর ঘটনায় প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, কিশোর আলো সম্পাদক আনিসুল হকসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ায় উদ্বেগ জানিয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।

এর প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী রবিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “যে কেউ বিবৃতি দিতে পারে। আমাদের দেশে মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে এবং যে কেউ তার মত প্রকাশ করতেই পারে। আমি দেখেছি কাগজে (পত্রিকায়) ৪৭ জন বিশিষ্টজন তারা এ ব্যাপারে বিবৃতি দিয়েছেন। তবে বাংলাদেশে এই ৪৭ জন ছাড়াই আরও হাজার হাজার বিশিষ্টজন বা বুদ্ধিজীবী আছেন। তো তারা তাদের বিবৃতি দিতেই পারে।”

তিনি বলেন, “কোনো অবহেলাজনিত মৃত্যুর জন্য বা অবহেলাজনিত মৃত্যু হওয়ার পর সেটি যদি লুকানোর অপচেষ্টা করা হয় বা একই সাথে পোস্টমর্টেম ছাড়া সেটিকে দাফন করা হয় এগুলোতো নিশ্চয়ই অপরাধ। এ ধরনের ঘটনাগুলোর সঠিক বিচার যাতে হয়, কারা দায়ী সেটি আদালত ঠিক করবে। যারা দায়ী তাদের যাতে সঠিক বিচার হয়, সেজন্য আমি আশা করব যে যারা বিশিষ্টজনেরা বিবৃতি দিয়েছেন, সেজন্য তারা একটি বিবৃতি দেবেন।

এই মামলার সঙ্গে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কোনো সম্পর্ক নেই জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি একটি ফৌজদারি অপরাধের কারণে মামলা হয়েছে এবং আদালত সেখানে গ্রেফতারি পরোয়ারা জারি করেছে। আদালত তো স্বাধীন, কোথায় গ্রেফতারি পরোয়ারা জারি করবে বা করবে না সেটি আদালতের এখতিয়ারের বিষয়। তবে এটির সাথে কোনোভাবেই গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই কারণ এটি গণমাধ্যমে প্রকাশিত কোনো সংবাদের জন্য তো মামলা হয়নি বা গণমাধ্যমে কোনো কিছু বলার জন্য তো মামলা হয়নি। এটি মামলা হয়েছে একটি ফৌজদারি অপরাধের কারণে।

হাছান মাহমুদ বলেন, তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিবৃতি দিয়েছিল। অ্যামেনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল যখন ফিলিস্তিনে মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয় সেটির বিরুদ্ধে কিন্তু বিবৃতি দেয় না। সুতরাং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের বিবৃতি খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। যারা বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বন্ধ করার জন্য বিবৃতি দেয় আর যারা ফিলিস্তিতে পাখি স্বীকার করার মত করে যখন মানুষ স্বীকার করা হয়, সেটির বিরুদ্ধে যখন বিবৃতি দেয় না, তাহলে সেই সংগঠনের গ্রহণযোগ্যতা আগে কোথায় ছিল সেটি আর বলতে চাই না, এখন কোখায় গেছে সে নিয়ে তো অনেকের মনেই প্রশ্ন আছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here