অনলাইন ডেস্ক : সরকারের উপসচিব ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তাদের মতো জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের উপসচিব বা সমমর্যাদার বা তদূর্ধ্ব কর্মকর্তারাও সার্বক্ষণিক গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন। এছাড়া সরকারের অন্যান্য বিভাগের মতো সুদমুক্ত বিশেষ অগ্রিম এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন সুবিধা দেয়া হবে তাদের। আসন্ন ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে বর্তমানে কর্মরত নিজস্ব ২২ জন উপসচিব বা সমমর্যাদার কর্মকর্তাদের অনুকূলে গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত বিশেষ অগ্রিম বাবদ জনপ্রতি ত্রিশ লাখ টাকা হারে মোট ছয় কোটি ষাট লাখ টাকা (এককালীন) বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এছাড়া গাড়ি সেবা নগদায়ন বাবদ জনপ্রতি মাসিক পঞ্চাশ হাজার টাকা হারে বছরে এক কোটি বত্রিশ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হবে।
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত সংসদ সচিবালয় কমিশনের ৩০তম বৈঠকে এ বিষয়গুলো অনুমোদন দেয়া হয়। জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন সংসদ কমিশনের চেয়ারম্যান স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। বৈঠকে কমিশনের সদস্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও বিরোধী দলীয় নেতার পক্ষে উপনেতা রওশন এরশাদ এবং প্রধান হুইপ নূর-ই আলম চৌধুরী লিটন উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, সরকারের উপসচিব ও তদুর্ধ্ব কর্মকর্তারা সরকারি গাড়ি ব্যবহারের সুবিধা পেলেও এতদিন সংসদের কর্মকর্তারা তা পেতেন না। সংসদ কমিশন প্রস্তাব অনুমোদন করায় এখন সেই সুবিধা পাবেন সংসদের নিজস্ব কর্মকর্তারাও। তবে সংসদ সচিবালয়ে প্রেষণে আসা কর্মকর্তাদের তাদের নিজস্ব মন্ত্রণালয় থেকে এই সুবিধা পাবেন। বর্তমানে সংসদ সচিবালয়ের নিজস্ব ২২ জন উপ-সচিব সংসদের গাড়ি বা গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত বিশেষ ঋণ পাবেন। এছাড়া বৈঠকে জাতীয় সংসদের ১৪ বছরের পুরনো পাজেরো জিপ গাড়ির জায়গায় নতুন ১০টি পাজেরো গাড়ি ক্রয়ের প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, সংসদ সচিবালয়ে ১০টি জিপ গাড়িগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। ওই সকল গাড়ি মেরামতের যে খরচ হয়, তা অনেক বেশি। তাই নতুন করে ১০টি জিপ গাড়ি কেনার কথা বলা হয়েছে। সেটা চলতি ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের বাজেটের অব্যয়িত ১২ কোটি টাকা ও আগামী অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দকৃত ১০ কোটি টাকা দিয়ে কেনা হবে। সংসদের কাজের গতি বাড়াতে গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে ড. শিরীন শারমিন জানান, কমিশন বৈঠকে সংসদ সচিবালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিভিন্ন ভাতার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে সাংবাৎসরিক কর্মচারীদের ভাতা ৪৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫১০ টাকা করা হয়েছে। সংসদীয় কমিটির বৈঠকের আপ্যায়ন খরচ ১০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে। আর সংসদীয় কমিটির সভাপতির দপ্তরের আপ্যায়ন ভাতা ১২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। তিনি জানান, নতুন কয়েকটি পদ সৃষ্টির পাশাপাশি সংসদ সচিবালয়ে পদোন্নতি জট খোলা হয়েছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়োগ ও পদোন্নতি সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলো অনুমোদন করা হয়েছে। এছাড়া সংসদ ভবনের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, মেরামতসহ সংসদ ভবনের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু সুপারিশ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। উল্লেখ্য, সার্বভৌম প্রতিষ্ঠান জাতীয় সংসদের সংশ্লিষ্টদের বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহের জন্য সংসদ সচিবালয় কমিশন বৈঠকে প্রতি বছর বাজেট বরাদ্দ অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে তা মূল বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এছাড়া কমিশন বৈঠকে সংসদ সচিবালয়ের নতুন পদ সৃষ্টি, প্রকল্প প্রণয়নসহ বিভিন্ন নীতি নির্ধারণী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।