প্রতিনিধি

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী শেফালী ঘোষ। ২০০৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর রবিবার সন্ধ্যায় জীবনের সকল মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে ভক্ত অনুরক্তদের শোকসাগরে ভাসিয়ে চিরকালের জন্য বিদায় নেন কিংবদন্তী শিল্পী শেফালী ঘোষ। এ গুণীর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। বোয়ালখালী উপজেলার কানুনগোপাড়া গ্রামে ১৯৪১ সালে জন্ম শেফালী ঘোষের। শিক্ষা সংস্কৃতিতে উদ্ভাসিত এ কানুনগোপাড়া গ্রামের গৌরবদীপ্ত ইতিহাস সারাদেশে বিস্তৃত। তাঁর পিতার নাম কৃষ্ণ গোপাল ঘোষ ও মাতার নাম আশালতা ঘোষ।
১০ বছর বয়স থেকে মাঠে-ময়দানে, ঘরোয়া অনুষ্ঠান কিংবা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বহু ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করে মন জয় করতে পেরেছিলেন অগণিত মানুষের। ১৯৬৪ সালে অডিশন দিয়ে তৎকালীন রেডিও পাকিস্তান চট্টগ্রাম কেন্দ্রের তালিকাভুক্ত হন এ শিল্পী। ১৯৭০ সালে যুক্ত হন টেলিভিশনের সাথে। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে কণ্ঠযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। তিনি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে এবং মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ ক্যাম্পে গান গেয়ে নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ান।
দেশ-বিদেশে বহু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ব্যাপক পরিচিত লাভ এবং চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গান তথা বাংলাদেশের লোকসংগীতকে ভিন্নতর এক মর্যাদায় অভিষিক্ত করেন তিনি। এভাবে গানে গানে হয়ে ওঠেন চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তী। মৃত্যুর পর গণমানুষের দাবির মুখে সরকার ২০০৮ সালে তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
বোয়ালখালীতে জেলা পরিষদের অর্থায়নে এ শিল্পীর সমাধিতে আবক্ষ মূর্তি স্থাপন ছাড়া তাঁর স্মরণে তেমন উল্লেখযোগ্য কোন কর্মকান্ড নেই। সরকারের কাছে একটি সড়ক এ শিল্পীর নামে করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছে এলাকাবাসী।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here