এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেয়।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।

জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, শিক্ষা সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনার, বাড্ডা থানার ওসি, সংশ্লিষ্ট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও পরিচালনা বোর্ডের সভাপতিকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আইনজীবী ইশরাত পরে বলেন, তাসলিমা বেগম রেনুর বড় বোন নাজমুন নাহার নাজমা ও আরেক বড় বোনের ছেলে সৈয়দ নাসিরুদ্দিন টিটো ক্ষতিপূরণ চেয়ে একটি রিট আবেদন করেছিলেন।

“প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আদালত তার পরিবারকে অর্থাৎ, বাবা আব্দুল মান্নান ও মা সবুরা খাতুনকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রশ্নে রুল জারি করেছেন।”

এ আদালতই সোমবার এ সংক্রান্ত আরেকটি রিটের ওপর শুনানি নিয়ে আদেশ দিয়েছিল। গণপিটুনি প্রতিরোধ এবং গণপিটুনির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তা স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে জানতে চাওয়া হয় ওই আদেশে।

সেই সঙ্গে গণপিটুনিতে তাসলিমা বেগম রেনুসহ নিহতদের জীবন রক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা ও নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না এবং গণপিটুনিতে নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি হয় সোমবার।

স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, শিক্ষা সচিব, পুলিশের আইজি, ডিএমপি কমিশনার ও বাড্ডা থানার ওসিকে চার সপ্তাহের মধ্যে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজে ‘মানুষের মাথা লাগবে’ বলে সম্প্রতি ফেইসবুকে গুজব ছড়ানোর পর গত জুলাই মাসে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছেলেধরা সন্দেহে আক্রমণের ঘটনা ঘটে।

এরই মধ্যে ২০ জুলাই উত্তর বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফটকে ৪২ বছর বয়সী তাসলিমা বেগম রেনুকে ছেলেধরা সন্দেহে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরিবারের ভাষ্য অনুযায়ী, তিনি তার মেয়েকে ভর্তির খবর নিতে ওই বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন।

রেনুকে পিটিয়ে হত্যার সময় প্রত্যক্ষদর্শীদের ধারণ করা কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ওই ভিডিওতে রড দিয়ে নির্দয়ভাবে তাসলিমাকে পেটাতে দেখা যায় রেনুকে।

ওই ঘটনার পর রেনুর বোনের ছেলে নাসির উদ্দিন টিটো বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ৪০০/৫০০ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় এ পর্যন্ত ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here