| বুধবার , ২ নভেম্বর, ২০২২ at ৪:৫৭ পূর্বাহ্ণ

দেশকে উন্নত করতে যে কোনো কাজ করার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখতে যুব সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, যে কোনো কাজ, কোনো কাজ করে নিজের অর্থ নিজে উপার্জন করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো… এটা অত্যন্ত গর্বের বিষয়। কারণ কোনো কাজকে আমরা ছোট করে দেখি না। কোনো কাজকে আমরা ছোট করে দেখব না। গতকাল মঙ্গলবার ‘জাতীয় যুব দিবস’ এর উদ্বোধন এবং ‘জাতীয় যুব পুরস্কার’ বিতরণ অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রীর এ আহ্বান আসে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন। খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের যুবকদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা একশ অর্থনৈতিক অঞ্চল সমগ্র বাংলাদেশে গড়ে তুলছি। যদি যথাযথভাবে প্রশিক্ষণ নিতে পারে, এই অর্থনৈতিক অঞ্চল, এখানে যে বিনিয়োগ হবে, বিনিয়োগ হচ্ছে, যত বেশি বিনিয়োগ হবে, আমাদের দেশের ছেলে মেয়েদেরই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে। করোনাভাইরাস মহামারীর সময় কৃষকদের ধান কেটে দিতে ছাত্রদের সহযোগিতার কথা গর্বের সঙ্গে স্মরণ করে সরকারপ্রধান বলেন, ঠিক এভাবেই যুব সমাজ যে কোনো কাজ করবার জন্য নিজেদেরকে প্রস্তুত রাখবে। যেটা আমাদের দেশকে উন্নত করবার ব্যবস্থা নেবে।
মহামারীর মধ্যে যুব সমাজ যেভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নানাভাবে সহযোগিতা করেছে, সেজন্যও তাদের ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, যে কোনো সংকট সমাধানে যুবকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। প্রযুক্তির নতুন নতুন আবির্ভাব। বিজ্ঞানের নতুন নতুন আবিষ্কার। তার সঙ্গে আমাদের তাল মিলিয়ে চলতে হবে। আর সেই কাজটা আমাদের যুব সমাজই করবে। ছাত্র, তরুণ… তারাই করবে। মহামারীর অভিঘাতে বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতি, রাশিয়া-ইউক্রেইন যুদ্ধের ফলে উন্নত দেশগুলোর পর্যুদস্ত দশার কথা এ অনুষ্ঠানেও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
ভবিষ্যতে খাদ্যভাব দেখা দেওয়ার যে শঙ্কার কথা এখন বলাবলি হচ্ছে, সে প্রসঙ্গ ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বাংলাদেশটাকে এর থেকে মুক্ত রাখতে হলে আমাদের প্রতি ইঞ্চি জমিতে আবাদ করতে হবে, তাছাড়া খাদ্য পণ্য উৎপাদন করা, প্রক্রিয়াজাত করা… তার জন্য দেশে ব্যবস্থা নিতে হবে। যুব সমাজের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, তারা যেন আরও উদ্যোগ নেয়। যার যার এলাকায় সে এলাকাভিত্তিক কাজও করতে পারে। খাদ্যপণ্য উৎপাদন এবং প্রক্রিয়াজাতকরণের মধ্য দিয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে অন্য দেশকেও বাংলাদেশ সহযোগিতা করতে পারবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মাটি অনেক উর্বর; এর সুফল পেতে দেশের জনশক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের কথা বিবেচনায় রেখে যুবকদের উপযুক্ত, সুপ্রশিক্ষিত, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের যুবকরা এত বেশি মেধাবী, তারা সব কাজেই পারদর্শিতা দেখাতে পারবে। এটাই হচ্ছে বড় কথা।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়ার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিজয়ী জাতি হিসেবে আমাদের সব সময় মাথা উঁচু করে চলতে হবে। কারও কাছে হাত পেতে না, মাথা নিচু করে না, আমরা নিজের দেশকে উন্নত, সমৃদ্ধ করবো নিজের শক্তি, মেধা, সম্পদ দিয়ে। এই চিন্তাটা আমাদের যুবকদের মাঝে সব সময় থাকতে হবে যে আমরা বিজয়ী জাতি। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিজয়ীর বেশে বিশ্বে আমাদের অবস্থান করে নেব। সেই চেতনা নিয়ে চলতে পারলে অবশ্যই বাংলাদেশে আর কেউ পিছিয়ে রাখতে পারবে না।
শোষিত বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আজীবন সংগ্রামের কথা তুলে ধরে দেশের উন্নয়নে জাতির পিতার নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথাও অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। যুবকদের কল্যাণে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা উদ্যোগের কথাও বলেন। তিনি বলেন, দেশপ্রেমের মূলমন্ত্রে এবং জাতির পিতার জীবনাদর্শে উজ্জীবিত হয়ে দেশ গঠনে নিজেদের আরও বেশি নিবেদিত করবে, আমি আমাদের যুবকদের (কাছে) সেটাই আশা করি। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল বক্তব্য দেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here