সাত সকালে রাস্তায় বের হয়েই ভিরমি খাওয়ার অবস্থা। সকাল নাকি সন্ধ্যা- হঠাৎ করে তা ঠাওর করা কঠিন। চারদিকে ধু ধু ধোঁয়াশা। একেবারে কাছের জিনিসও স্পষ্ট নয়। সড়কে মাঝে মধ্যে দুই একটি গাড়ি পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছে খুব ধীরে, তাও হেডলাইট জ্বালিয়ে।

মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলাকালে কয়েকদিন ধরে কুয়াশার আড়ালে ছিল সূর্য। যেমন কনকনে ঠাণ্ডা তেমনি ছিল কুয়াশার। শৈত্যপ্রবাহ কাটার পর গত সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) রাজধানীতে দেখা মেলে সূর্যের। এরপর গতকাল মঙ্গলবার আবার কুয়াশাঢাকা সকাল পায় রাজধানীবাসী। তাপমাত্রা একটু বাড়লেও শীতের কামড়ও ছিল বেশ। আজ ঠাণ্ডা গতকালকের চেয়েও কম। তবে চারদিক ঢেকে আছে কুয়াশায়।

সকালে রাজধানীতে ঘরের বাইরে বের হলেই চোখে পড়েছে কুয়াশার দাপট। একটু দূরের জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। রাস্তাঘাটে রিকশাসহ যানবাহনের সংখ্যা অনেক কম। জরুরি কাজ ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছে না। যানবাহনগুলো চলছে হেডলাইট জ্বালিয়ে। সাত সকালে রাজধানীর পূর্বাঞ্চলে ঘরের বাইরে এসে অপ্রস্তুত নগরবাসী মুখোমুখি হয়েছেন তীব্র কুয়াশার।

সকাল সাড়ে ৯টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সূর্যের দেখা পাওয়ার কোনো লক্ষণই দেখা যায়নি। কুয়াশায় যেন হার মানে রোদের তীব্রতা। থেমে থেমে নগরবাসীকে ছুঁয়ে যায় কুয়াশায় ঘেরা ঘন বাতাস। বায়ু দূষণের কারণে বিপর্যস্ত ঢাকা নগরবাসীরা অনেকেই কুয়াশার কারণে বাড়তি শ্বাসকষ্টের মুখোমুখি হচ্ছেন।

এদিকে, গত বুধবার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিস্তীর্ণ অঞ্চলে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। যেটি গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। এরইমধ্যে যশোরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। চুয়াডাঙ্গা, পাবনা, রাজশাহী ও পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সাধারণত দেশের কোথাও তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে এলে তখন তাকে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য বলছে, উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে আসা ঠাণ্ডা বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের বেশি হলে শীতের অনুভূতি বাড়ে। কয়েকদিন ধরে ঠাণ্ডা বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ১০ কিলোমিটারের বেশি ছিল। সে কারণে ঢাকাসহ দেশের অন্য এলাকায় ছিল কনকনে শীত। হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে খেটে খাওয়া মানুষ।

এ ছাড়া দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য কম থাকলেও মানুষের কাছে বেশি শীত অনুভূত হয়। গত কয়েক দিন দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল খুবই কম। সে কারণেও কনকনে শীত। একই সঙ্গে ঘন কুয়াশার কারণে ফেরি চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরসহ অন্য বিমানবন্দরেও উড়োজাহাজ চলাচল ব্যাহত হয়েছে। শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হারও বেড়েছে গত কয়েক দিনে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের ভর্তির হার বেশি।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here