জগলুল হুদা

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান গোলাম রাব্বানী কনস্ট্রাকশন সূত্রে জানা যায়, তথ্যমন্ত্রীর হাত ধরে ৪৫৮ কোটি টাকার বিশাল এ বরাদ্দ বাস্তবায়িত হচ্ছে। বরাদ্দের আওতায় রাঙ্গুনিয়ার সংসদীয় এলাকা বোয়ালখালী থেকে শুরু করে বেতাগী, সরফভাটা, পোমরা, রাঙ্গুনিয়া পৌরসভা, মরিয়মনগর, কোদালা, চন্দ্রঘোনা-কদমতলী ইউনিয়নসহ বিভিন্ন এলাকায় ব্লক স্থাপন কার্যক্রম চলছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এরই মধ্যে নদীভাঙন প্রতিরোধে ব্লক স্থাপনের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। আগামী কোরবানি ঈদের আগেই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানের সুপারভাইজার জমির উদ্দিন।

বোয়ালখালী ও রাঙ্গুনিয়ায় কর্ণফুলী নদীর ভাঙনে শত শত পরিবার দুই যুগ ধরে বাপ-দাদার পৈত্রিক ভিটামাটি হারিয়ে পথে বসেছে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষ ভাঙনের মুখে পড়ে নিঃস্ব হয়ে সহায়-সম্বল হারিয়েছেন অনেকেই। গত বছরেও ছিল কর্ণফুলী নদীর এমন ভাঙনের তান্ডব। রাক্ষুসে কর্ণফুলীর এমন তান্ডবের চিত্র এখন পাল্টে গেছে। তথ্যমন্ত্রীর হাত ধরে নদীপাড়ের মানুষের ভাগ্য বদলে গেছে। যেখানে মানুষের ভিটেমাটি হারানো হাহাকার ছিল প্রতিনিয়ত, সেই নদীর পাড় এখন মানুষের অবকাশ যাপনের উত্তম স্থানে পরিণত হয়েছে।

এদিকে সাধারণ মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হওয়ায় তথ্যমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নদীর ভাঙনকবলিত এলাকার হাজার হাজার মানুষ। মানুষের দাবির চাইতেও বেশি প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুসসহ বিভিন্ন মাধ্যমে তথ্যমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছেন এসব এলাকার মানুষ। এরই মধ্যে অধিকাংশ স্থানে ব্লক স্থাপনের কাজ শেষ হয়েছে। ব্লক স্থাপনের পর পাল্টে গেছে নদী পাড়ের সার্বিক চিত্র। কর্ণফুলীর স্বচ্ছ জলরাশির সাথে নদীপাড়ের গভীর সখ্যতা এখন চোখে পড়ার মতো। ব্লক স্থাপনের আওতায় আসা প্রতিটি এলাকা রূপ নিচ্ছে একেকটি পর্যটন এলাকা হিসেবে। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ব্লকের ওপর বসে বিভিন্ন দূর-দূরান্তের মানুষ নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসতে দেখা যাচ্ছে। চন্দ্রঘোনা বুইজ্জার দোকান এলাকার বাসিন্দা এম কোরেশী শেলু জানান, আমার বাড়ির প্রায় ১৫০ মিটার ব্যবধানে কর্ণফুলী নদী। নদীর পাড়ে ব্লক নির্মাণের কাজ চলছে। এদে নদীর পাড়ের ভাঙনের রোষানলে থাকা পরিবারের মধ্যে নেমেছে আনন্দের ছোঁয়া। পশ্চিম সরফভাটা মৌলানা গ্রামের আবদুল হক জানান, নদীভাঙন যে কতটা ভয়াবহ, তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেই বুঝবে না। এ দুঃখ উপলব্দী করে তথ্যমন্ত্রীর হাত ধরে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ের সার্বিক চিত্র বদলে গেছে। কর্ণফুনী নদীর দুই পাড়ে মানুষের কান্নার আওয়াজ আর শোনা যাবে না।

কোদালা এলাকার বদিউল আলম জানান, বর্ষা মৌসুমে কাপ্তাই বাঁধের পানির ঢলে কূল ভেঙে ঘরপড়া মানুষের আর্তনাদ চোখে দেখা যেত না। রাতে ঘুমের মধ্যে কত মানুষ যে ভাঙনের মুখে পড়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। কিন্তু নদীপাড়ের এ চিত্র এখন পাল্টে গেছে। তথ্যমন্ত্রীর হাত ধরে নদীপাড়ের মানুষ এখন স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে।

পৌরসভার দক্ষিণ ঘাটচেক এলাকার বাসিন্দা রবিন জলদাশ জানান, তথ্যমন্ত্রীর হাত ধরে আমাদের কর্ণফুলীর পাড়ের বাসিন্দাদের আতঙ্কের দিন শেষ হয়েছে। সবার মুখে এখন স্বস্তির হাসি ফুটেছে।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here