করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সরকারের নির্দেশনা মানাতে মাঠপর্যায়ের পুলিশকে কড়া নির্দেশনা দিয়েছেন আইজিপি ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারি।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব ডিআইজি, মেট্টোপলিটন কমিশনার ও বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপারকে এ নির্দেশনা দেন।
নির্দেশনায় করোনাভাইরাস প্রতিরোধে নিজের নিরাপত্তা বজায় রেখে সকলকে একসঙ্গে কাজ করার কথা বলেন তিনি। তবে নিরাপত্তার অজুহাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভেঙে না পড়ে সেদিকেও তাগিদ দেন আইজিপি।
বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) পুলিশ সদর দফতর এবং বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপাররা এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সদর দফতর থেকে জানা যায়, ভিডিও কনফারেন্সের সময় র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মেট্টোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম, এসবি প্রধান শরিফুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান আব্দুল্লাহ আল মামুন সংযুক্ত ছিলেন। পুলিশ সুপারদের মধ্যে রংপুর, ময়মনসিংহ, বগুড়া, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা ও বরিশাল পুলিশ সুপার ছিলেন।
ভিডিও কনফারেন্সে আইজিপি বলেছেন, করোনাভাইরাস প্রতিরোধী প্রায় ৫০ হাজার পুলিশ সদস্যের জন্য পারসোনাল প্রটেকটিভ ইকুপমেন্ট (পিপিই), মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লোবস বিভিন্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করবেন তারা এসব ব্যবহার করবেন। এসব প্রতিরোধী পণ্য আরও বেশি পুলিশ যেন ব্যবহার করতে পারেন সে জন্য প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। এসব পরে মাঠপর্যায়ে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে।’
সরকারি নির্দেশনা যারা মানছেন না এবং ঘরের বাইরে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তাদের প্রতি কঠোর হতে বলেছেন আইজিপি। এ মুহূর্তে সবার একটিই কাজ তা হলো ঘরে অবস্থান করা। সেটি যেন সবাই করতে পারে সে ব্যাপারে পুলিশকে আরও বেশি মনোযোগী হতে বলেছেন আইজিপি।
আইজিপি বলেছেন, নিজের নিরাপত্তার অজুহাতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যেন ভেঙে না পড়ে সেদিকেও নজর দিতে হবে।
আইজিপি জানান, যাদের গ্রেফতার করা হবে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা বলেছেন। জ্বর-সর্দি, কাশি থাকলে চিকিৎসার দিকেও নজর দিতে হবে। কোনোভাবেই যেন অপরাধী ধরা বন্ধ না থাকে। তবে তাদের কাছ থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।
প্রবাসী যারা দেশে ফিরে হোম কোয়ারেনটাইন মানছেন না তাদের ব্যাপারেও কঠোর হতে বলেছেন আইজিপি।
নির্দেশনায় আরও বলেছেন, কোনোভাবে যাতে পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বন্ধ হয় সে জন্যও পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্যোগী হতে হবে। ওষুধের দোকান, মুদি দোকান, কাঁচা তরি তরকারির দোকান, মাছ-মাংসের দোকান যেন খোলা থাকে সেদিকে মনিটরিং করতে বলা হয়েছে। কেউ যেন পণ্য মজুদ করতে না পারে সে জন্য জেলা প্রশাসককে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এ জেলায় প্রবাসীর সংখ্যা অনেক বেশি। করোনা পরিস্থিতিতে প্রায় ২০ হাজার লোক বিদেশ থেকে এসেছেন। তাদের অনেকেই কোয়ারেনটাইন না মেনে চলাফেরা করতেন। যা সব জায়গায় প্রচার হয়েছে। আইজিপি নির্দেশনা দিয়েছেন যাতে তারা আর বের হতে না পারে। এছাড়া সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, যেন সবাই সরকারি নির্দেশনা মানে। জরুরি দোকান খোলা রয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বের হতে দেওয়া হচ্ছে না।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দফতরের সহকারি মহাপরিদর্শক (এআইজি মিডিয়া) মো. সোহেল রানা বলেন, গত কয়েকদিন থেকেই আইজিপি মাঠ পর্যায়ের পুলিশ সদস্যদের নানা নির্দেশনা দিয়ে আসছেন। করোনা মোকাবিলায় সবাই যেন একযোগে কাজ করতে পারে সেটিই সকলের চাওয়া। এই সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশকে জনপ্রতিনিধি, চৌকিদার এবং অন্যান্য ভলান্টিয়ারদের নিয়েও কাজ করতে বলা হয়েছে।