দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এমপিওভুক্ত হলো সারাদেশের বিভিন্ন পর্যায়ের ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত ১ জুলাই অর্থাৎ অর্থবছরের শুরু থেকেই এ সিদ্ধান্ত কাযকর হবে। আজ বুধবার গণভবনে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা প্রকাশ করেন।
এ সময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ও উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নীতিমালার নির্দেশনা ও চাহিদা পূরণ করতে পারা ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে। এমপিওভুক্ত করা হয়েছে, এখন না পড়ালেও টাকা পাওয়া যাবে, শিক্ষকদের এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। কারণ শিক্ষার মান ধরে রাখতে না পারলে এমপিওভুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হবে। সবাইকে সেটা মনে রাখতে হবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নীতিমালা করা এবং সে অনুযায়ী স্কুলগুলোর যাচাই-বাছাই করতে কিছু সময় লেগেছে। যাচাই-বাছাই করে আমরা ২ হাজার ৭৩০ প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করেছি। আগামীতে যারা এমপিওভুক্ত হতে চান, তাদের অবশ্যই নীতিমালার নির্দেশনা পূরণ করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘কোথায় কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হবে, কীভাবে শিক্ষক নিয়োগ হবে, সেই পরিকল্পনা করেছি আমরা। এখন যত্রতত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে। কিন্তু সবগুলোর মান ভালো নয়। স্কুলগুলো যাতে তাদের মান ঠিক রাখে, তাই আমরা নীতিমালা তৈরি করেছি। এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষকরা আন্দোলনও করেছেন। আমরা বলেছিলাম সবই করব। আমরা সব করেছিও।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইচ্ছে হলো কিংবা রেশারেশির বা রাজনৈতিক কারণে স্কুল তৈরি হয়। এমপিওভুক্ত বা সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির শিক্ষকদের টাকা প্রতিষ্ঠানে চলে যেত। আমরা ঠিক করলাম যার যার বেতন তার তার কাছে যাবে। পে-অর্ডারের মাধ্যমে টাকা পৌঁছে যাবে। এরপর মাসিকভিত্তিতে যখন টাকা পাঠালাম, তখন ৬০ হাজার শিক্ষককে আর পাওয়া গেল না।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষাকে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছি। তাই শিক্ষা খাতে বাজেটে বরাদ্দ সবচেয়ে বেশি দিয়েছি। স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব তৈরি করে দিচ্ছি, যাতে আধুনিক শিক্ষা থেকে ছেলেমেয়েরা বঞ্চিত না হয়। অনলাইনে অনেকে চাকরি করতে পারছে। আমরা সেভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। কওমি মাদ্রাসাগুলোতেও সনদের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয়েছে। সনদ না থাকাতে তারা কাজ পেতো না। প্রাতিষ্ঠানিক অনুমোদন প্রয়োজন ছিল। তারাও এদেশের সন্তান, তাদের কথাও চিন্তা করতে হবে।’
তিনি বলেন, কিছু জায়গা বিশেষ করে হাওর-বাঁওড়, পাহাড়, চর ও দুর্গম এলাকার কথা বিবেচনায় রাখা হয়েছে। সেখানে নীতিমালা কিছুটা শিথিল করে দেওয়া হয়। এসব জায়গায় আমরা আবাসিক স্কুল করে দিতে চাই। যাতে সেখানে থেকে শিশুরা লেখাপড়া করতে পারে।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং এমপিওভুক্তির কাজের সঙ্গে জড়িত সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শুভেচ্ছা জানান তিনি।
সবশেষ ২০১০ সালে ১ হাজার ৬২৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করেছিল সরকার। এর পর দীর্ঘদিন এমপিওভুক্তি বন্ধ থাকায় আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এমপিও বা মান্থলি পেমেন্ট অর্ডারের তালিকাভুক্ত বেসরকারি স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরা তাদের বেতনের একটি অংশ সরকার থেকে পান।