রাশেদা রওনক খান : একটা ছবি খুব ফেসবুক ঘুরে বেড়াচ্ছে! বয়স্ক মানুষজনকে কান ধরে উঠ বস করাচ্ছেন প্রজাতন্ত্রের এক কর্মকর্তা! কিন্তু এভাবে না করে যদি হাসি মুখে বলতেন, “চাচা, বাসায় যান|” চাচা তো দৌড়ে যেতো, যেতো না?

তাহলে আমরা সেবা প্রদানকারী মানুষজন কেন এতোটা অমানবিক, হিংস্র আর অবিবেচক হয়ে উঠি? হয়তো এই মানুষটি তাঁর সন্তানদের মুখে একটু খাবার গুঁজে দেবার আশায় রাস্তায় নেমেছে। কী হতো তাঁকে বুঝিয়ে শুনিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দিলে?

একদিকে তাদের খাবারের কী ব্যবস্থা হবে, তা অনিশ্চিত। তাঁর মাঝে এভাবে কানে ধরে উঠাবসা, ভাবছি পোশাকে কর্মকর্তা হলেও কতো নিম্নমানের বিবেক আমাদের?

হাঁ, ঘরে ঢুকানোর জন্য সারাবিশ্বেই চলছে পুলিশের হুমকি-ধামকি! কিন্তু এইরকম চিত্র কেবল পাশের দেশগুলো আর আমাদের মাঝেই দেখা যাচ্ছে! আমরা আসলে ‘সার্ভিস প্রদানকারী’/’জনগণের সেবক’ – এর অর্থই হয়তো বুঝি না!

যেহেতু বুঝিনা, তাই ১৯৭৫ সালের ২৬ মার্চে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে এই ‘জনগণের সেবক’ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু কী বলেছিলেন, সেটা শুনি –

“সরকারি কর্মচারীদের বলি, মনে রেখো, এটা স্বাধীন দেশ। এটা ব্রিটিশের কলোনি নয়। পাকিস্তানের কলোনি নয়। যে লোককে দেখবে, তার চেহারাটা তোমার বাবার মত, তোমার ভাইয়ের মত। ওরই পরিশ্রমের পয়সায় তুমি মাইনে পাও। ওরাই সম্মান বেশি পাবে। কারণ, ওরা নিজেরা কামাই করে খায়।”….”আপনি চাকরি করেন, আপনার মাইনে দেয় ঐ গরীব কৃষক। আপনার মাইনে দেয় ঐ গরীব শ্রমিক।

আপনার সংসার চলে ওই টাকায়। আমরা গাড়ি চড়ি ঐ টাকায়। ওদের সম্মান করে কথা বলুন, ইজ্জত করে কথা বলুন। ওরাই মালিক। ওদের দ্বারাই আপনার সংসার চলে।

রাশেদা রওনক খান : শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here