প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মো. আনোয়ার হোসেন বিপিএম (বার) বলেছেন, সাম্প্রতিককালে কয়েক সপ্তাহের ঘটনাবলীতে সবারই হৃদয়ে একটা ক্ষত হয়েছে, একটা দাগ হয়েছে। মানুষে মানুষে ঝগড়া লাগে, বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাকাটাকাটি হয়, মারামারিও হয়। ধর্মীয় কারণে কেন হবে বলতে পারবেন? কোন ধর্মে আছে যে, ধর্মীয় কারণে তুমি অন্য ধর্মের লোকের ওপর আঘাত করতে পারবে?
শনিবার (৩০ অক্টেবর) সকাল ১১টায় উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারে বোয়ালখালী থানা প্রশাসন আয়োজিত কমিউনিটি পুলিশিং সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি কোথাও পেলাম না, অন্যের সম্পদের ওপর, ব্যক্তির ওপর আঘাত করা যায়। কেউ যদি করে, তার বিচার হবে। বিচারের প্রচলিত বিধান আছে, আইন আছে। সেই অনুযায়ী তার বিচার হবে। তিনি বলেন, ধর্মের অবমাননা করার জন্য আপনার যদি খারাপ লাগে, কষ্ট লাগে আপনি প্রতিবাদ করতে পারবেন, প্রতিবাদের ভাষা আছে। আপনি নিন্দা জ্ঞাপন করবেন, বিচারের দাবি করবেন, বিচার চাইবেন, গ্রেফতার চাইবেন। সবই আপনি চাইতে পারেন এবং এর নামে সম্প্রতি যা হলো তা কারোরই কাম্য নয়। ঘটনা কুমিল্লাই। পবিত্র কোরান শরীফ পূজা মন্ডপে রেখে দিয়েছে তা অবশ্যই অপরাধ। সবার মনে আঘাত লাগবে। তো আমার কাজ কি? যে এই কাজটা করেছে তাকে খুঁজে বের করা, তাকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসা। নাকি এর জন্য অন্যের বাড়িতে আক্রমণ করা? নোয়াখালীর মানুষ কি দোষ করলো, লক্ষ্মীপুরের মানুষ কি দোষ করলো? কক্সবাজার-চকরিয়ার মানুষ কি দোষ করলো? কি হুজুগে আমরা চলি। এটা তো মধ্য যুগ নয়, এটা আধুনিক যুগ।
তিনি আরো বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেউ একজন মেসেজ দিলো, তার যাচাই বাছাই না করে, যে দিলো তার পরিচয় না জেনে আমরা দৌঁড়াতে শুরু করলাম। মনে রাখতে হবে এদেশ অনেক রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। এদেশ সকলের। আমরা শান্তি চাই, শৃঙ্খলা চাই।
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুল করিমের সভাপতিত্বে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দিন আহমদ।
থানা পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সাইফুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক পিপিএম, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা বোরহান উদ্দিন এমরান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এম সেলিম, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার ও পৌর মেয়র জহুরুল ইসলাম জহুর।