বিভাগের সম্পাদক

সুচরিত চৌধুরী প্রথিতযশা কথাসাহিত্যিক হিসেবে সুপরিচিত। কাব্য ও সংগীত জগতেও তাঁর বিচরণ ছিল, বাজিয়েছেন বাঁশি। তবে সব কিছু ছাপিয়ে কথাশিল্পী হিসেবেই তিনি প্রতিষ্ঠিত ও স্বীকৃত হয়েছেন।

সুচরিত চৌধুরীর জন্ম ১৯৩০ সালের ২১ জানুয়ারি চট্টগ্রাম জেলার বোয়ালখালীর কধুরখীল গ্রামে । বাবা আশুতোষ চৌধুরী ছিলেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকগীতিকা সংগ্রাহক। সুচরিতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বলতে চট্টগ্রাম কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক। মূলত এসবে তাঁর তেমন আগ্রহ ছিল না। বাবার প্রভাব এবং পারিবারিক সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল তাঁকে সাহিত্যানুরাগী করে তোলে। বাঁশি, সংগীত আর সাহিত্য ণ্ড এই তিন ভুবনেই নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন সুচরিত। তবে বাঁশি বাজানোয় ছিল প্রবল অনুরাগ। সুচরিত চৌধুরী করাচি থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক দিগন্তের সম্পাদনা ও প্রকাশনার সাথে যুক্ত ছিলেন, জড়িত ছিলেন চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক রেনেসাঁ, মাসিক উদয়ন ও মাসিক সীমান্ত পত্রিকার সাথে। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই চট্টগ্রাম বেতারের নিয়মিত শিল্পী ছিলেন তিনি। নিভৃতচারী এই লেখক ‘সুরাইয়া চৌধুরী’, ‘চলন্তিকা রায়’ এবং ‘শুধু চৌধুরী’ ছদ্মনামেও লিখেছেন। ‘শুধু’ সুচরিতের ডাক নাম।

তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে ‘শুধু চৌধুরীর সেরা কবিতা’, ‘সুরাইয়া চৌধুরীর শুধু গল্প’, ‘আকাশে অনেক ঘুড়ি’, ‘একদিন একরাত’, ‘নদী নির্জন নীল’, ‘সুচরিত চৌধুরীর শ্রেষ্ঠ গল্প’, ‘সুচরিত চৌধুরীর নির্বাচিত গল্প’, কিংবদন্তীর গল্প: চট্টগ্রাম’ উল্লেখযোগ্য। এছাড়া ‘সুরলেখা’ নামে গানের সংকলন এবং ‘নানা’ নামে একটি অনুবাদ গ্রন্থ রয়েছে তাঁর। সুচরিতের রচনায় নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের দৈনন্দিন জীবনাচার, বেদনা, অনুরাগ, দ্রোহ ও আর্তি প্রাঞ্জল আর নিরাভরণ ভাষায় জীবন্তরূপ পেয়েছে। ছোটগল্পের জন্যে তিনি ১৯৭৬ সালে বাংলা একাডেমী পুরস্কার লাভ করেছেন। ১৯৯৪ সালের ৫ জানুয়ারি সুচরিত চৌধুরী প্রয়াত হন।

এবি/টিআর

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here