আবো. ডেক্স :
হযরত আবূ হুরায়রাহ রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহূ হতে বর্ণিত, নবী করীম (সা) এরশাদ করেছেন, “রমজানের রোজার পর উত্তম রোজা হল মুহাররম মাসের (আশূরার) রোযা।আর ফরয নামাজের পর উত্তম নামায হল রাত্রিকালীন (তাহাজ্জুদ) নামাজ।[সূত্র-মুসলিম শরীফ ]
আশুরা দিনের ঐতিহাসিক ঘটনাগুলি
১.আশুরার দিনে আল্লাহপাক আরশ,কুরশী,লাওহ,কলম,সূর্য,চন্দ্র নক্ষত্ররাজি সৃষ্টি করেছেন।
২.আসমান যমীন ও জান্নাত সৃষ্টি করেছেন এই দিনেই।
৩.হযরত জিব্রাইল(আ), মুক্বাররাবী ফেরেশতেদের সৃষ্টি করেছেন এই দিবসেই।
৪.আমাদের আদিপিতা হযরত আদম (আ) সৃষ্টি করা হয়েছে এ দিবসেই।এ দিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিল এবং বেহেশত হতে দুনিয়াতে অবতরণের পর সাড়ে তিনশ বছর কান্নাকাটিরর পর তার তওবা কবুল করা হয়েছিল এই আশূরার দিবসেই।
৫.হযরত নূহ (আ) ও তাদের অনুসারীদের জাহাজকে মহাপ্লাবন থেকে মুক্তি দিয়েছেন এ দিবসেই।
৬.আশূরার দিবসেই হযরত ইয়নুস(আ) কে মাছের পেট থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন।
৭.আল্লাহ তালা মুসা(আ) কে ফিরাউনের কবল থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন এবং ফিরাউন ও তার দলবল কে নীল নদে ডুবিয়ে মেরেছিলেন এই দিবসেই।
৮.আশূরার দিনেই আল্লাহপাক আসমান হতে সর্বপ্রথম রহমতের বৃষ্টি বর্ষণ করেছিলেন।
৯.আশূরার দিনেই ইব্রাহীম (আ) জম্ন হয়েছিল এবং এ দিনে আল্লাহপাক তাকে নমরুদের অগ্নিকুণ্ড হতে নাজাত দিয়েছিলেন।
১০.হযরত ইয়নুস (আ) এ দিনেই আল্লাহপাক মাছের পেট থেকে মুক্ত করেছিলেন।
১১.আল্লাহতালা এদিনেই হযরত সুলায়মান (আ) কে ‘মুলকে আযীম’ তথা মহা রাজত্ব দান করেছিলেন।
১২.এ দিনেই আইয়ূব(আ) কে গভীত কূপ থেকে বের করা হয়েছিল।
১৩।সর্বশেষ এই আশূরার দিনে তথা হিজরি ৬১ সনের মহাররমের দশ তারিখ আমাদের প্রিয় নবী(সা) এর আদরের দুলাল,মা ফাতিমাতুয যাহরা (রা) কলিজার টুকরা বেহেশতী যুবসর্দার হযরত ইমাম হুসাইন(রা) কুখ্যাত ইয়াযীদের কালো হাত থেকে ইসলাম ও মুসলমানদের রক্ষাকল্পে ঐতিহাসিক কারবালার ময়দানে শাহাদাত কবুল করেছেন।
১৪.মুহাররমের দশ তারিখ তথা আশূরার দিনেই কিয়ামত সংগঠিত হবে।
আশুরার ফযিলত
আশুরার দিনে ইবাদত বন্দেগীরর অনেক ফযীলত আছে। পূর্ববর্তী নবীগন এদিবসে রোযা রাখতেন।আর আমাদের শরীয়তে এ দিবসের রোযা রাখা মুস্তাহাব।যেমন হাদিস শরীফে আছে”হযরত ইবনে আব্বাস (রা) হতে বর্ণীত, রাসূলে আকরাম(সা)মদীনা মুনাওয়ারা হিযরত করতে এসে দেখতে পেলেন যে- মদীনার ইহুদীরা আশূরার দিনে রোযা পালন করছে।আলাহর রাসূল তাদেরকে জিজ্ঞেস করলেন,তোমরা এ দিনে রোযা পালন কর কেন?তারা বলেন এটা এমন একটা দিন যে আল্লাহতালা হযরত মুসা(আ)কে নাজাত দিয়েছিলেন এবং ফিরাউন ও তার অনুসারীদের কে ডুবিয়ে মেরেছিলেন। মূসা(আ)এ দিনের নাজাতের শুকরিয়া আদায় করার জন্য রোযা রাখতেন, আমরাও তার অনুসরণ এর কারনে রোযা পালন করি।আল্লাহর রসূল(সা) এরশাদ করলেন-তোমাদের চেয়ে আমরা হযরত হযরত মুসা এর বেশী হকদ্বার এবং অধিক ঘনিষ্ঠ। এর পর হতে আল্লাহর রাসুল(সা) এই দিবসে নিজেই রোযা রাখতেন এবং উম্মতকে রোযা রাকার নির্দেশ দেন”[ বুখারী,মুসলিম শরীফের সুত্রেমিশকাত ঃ১৮০ পৃষ্ঠা ]