নিজস্ব প্রতিবেদক

দুই দশক থেকে তিন দশক ধরে চাকরি করেও স্থায়ী হতে পারেননি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের অস্থায়ী কর্মচারী-কর্মকর্তারা। এ সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। দীর্ঘদিন নিয়োগ-পদোন্নতির স্থগিতাদেশের তৈরি হওয়া জটিলতার অবসান হয় তিন বছর আগেই। তখন থেকে শূন্যপদগুলো পূরণের মাধ্যমে স্থায়ীকরণের দাবি জানিয়ে আসছিলেন অস্থায়ীরা।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবরুদ্ধ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অস্থায়ীরা। এ নিয়ে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাসে বিক্ষোভ বন্ধ হলেও অতিসত্তর দেড় হাজার শূন্যপদে স্থায়ীকরণ প্রক্রিয়া শুরু চান অস্থায়ীরা।
অস্থায়ীরা জানিয়েছেন, চসিকের অনুমোদিত জনবল কাঠামো অনুযায়ী পদ আছে ৪ হাজার ২২৬টি। কিন্তু কর্মরত আছেন ৮ হাজার ৮০৩ জন। এর মধ্যে স্থায়ী আছেন ২ হাজার ৭৭০ জন। অর্থাৎ অস্থায়ী আছেন ৬ হাজার ৩৩ জন। অনুমোদিত জনবল কাঠামোর বিপরীতে বর্তমানে শূন্য পদ আছে এক হাজার ৪৫৭টি। মন্ত্রণালয়ের চিঠির পরও অস্থায়ীদের স্থায়ীকরণ নিয়ে আমলাদের গড়িমসি লক্ষ্যণীয় ছিলো। এমনকি তাদের স্থায়ী না করে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ১৩ পদে ৬০ জন নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। তখন স্থায়ীকরণের মাধ্যমে শূন্যপদ পূরণের দাবিতে আন্দোলন করেন অস্থায়ীরা। পরে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি স্থগিত করে চসিক। এতে ক্ষোভ ছড়িয় পড়লে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেন অস্থায়ীরা। ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে সর্বশেষ গত ১১ অক্টোবর অবস্থান কর্মসূচি করার কথা ছিল। তবে চসিকের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে কর্মসূচি পালন করেননি অস্থায়ীরা। বারবার আশ্বাস মিললেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপের দেখা মিলেনি।
এ বিষয়ে সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে নিয়োগ দেওয়ার জন্য। কিন্তু আমাদের এখানে অস্থায়ী যারা রয়েছেন, তাদের চাকরি অনেক বছর হয়েছে। তাদের দাবিগুলো নমনীয়। তারা যেদিন থেকে স্থায়ী হবেন সেদিন থেকে কার্যকর চান। এতোদিন চাকরি করেও স্কেল অনুযায়ী বকেয়া দাবি করছেন না। খুব কম সময়ের মধ্যে তাদের স্থায়ী করার প্রক্রিয়া শুরু করবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চসিকের সিবিএ’র সভাপতি ফরিদ আহমদ পূর্বদেশকে বলেন, দীর্ঘদিন আন্দোলন করে শূন্যপদ পূরণের অনুমতি মিলেছে। এমনকি সিটি করপোরেশনের সাধারণ সভায় সর্বসম্মতিক্রমে অনুমোদিত ও দ্রæত শূন্যপদ পূরণের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা। কিন্তু অজানা কারণে তা হচ্ছে না।
মেয়র মহোদয় কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জানিয়ে ফরিদ আহমদ আরও জানান, আগামী রবিবার থেকে একটি কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে মেয়র মহোদয় আশ্বাস দিয়েছেন। এতে বিশ্বাস রেখে আমরা কাজে ফিরেছি।
একই বিষয়ে অস্থায়ী কর্মকর্তা কর্মচারী পরিষদের আহ্বায়ক আবু তাহের পূর্বদেশকে বলেন, স্থায়ীকরণ ইস্যুতে শুরু থেকেই চিফ স্যার গড়িমসি করছেন। শ্রমিকরা বলেছেন তিনি না পারলে যেন দায়িত্ব ছেড়ে দেন। যেহেতু তার বদলির অর্ডার এসেছে। তার স্থলে আরেকজন আসলে কাজ শুরু হবে। প্রায় এক হাজার শূন্যপদ আছে। বিপরীতে ৬ হাজার অস্থায়ী কর্মচারী-কর্মকর্তা রয়েছে। শূন্যপদগুরো পূরণের প্রক্রিয়া শুরু হলে ধীরে ধীরে অস্থায়ীরা স্থায়ী হতে পারবেন।

Print Friendly, PDF & Email

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here